প্রকাশিত: Thu, May 16, 2024 11:49 AM
আপডেট: Mon, Jun 23, 2025 9:41 AM

[১]বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বাসের ঘাটতি দূর করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র: ডোনাল্ড লু [২]লু এসেছেন এ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

খুররম জামান: [৩] সফররত যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরো দৃঢ় করতে কাজ করার কথা বলেন।

[৪] তিনি বলেন,  মানবাধিকার, নির্বাচনসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে ঢাকার সঙ্গে আলোচনা হবে। কিন্তু তার আগে দুইদেশের জন্য ইতিবাচক এমন অনেক  বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।  

[৫] এর পরেই পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ভিন্ন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও বলিষ্ঠ করতে চায় এবং লু এসেছেন এ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে। এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, নির্বাচন বা মানবাধিকার নিয়ে তার সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি।

[৬] লু তার বক্তব্যে বলেন, আমি গত দুইদিন ঢাকায় দুইদেশের জনগণের মধ্যে নতুন করে আস্থার জায়গা তৈরি করার জন্য অনেকের সঙ্গে আলোচনা করছি। আমরা জানি গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে অনেক টেনশন কাজ করেছে।  বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অহিংস নির্বাচনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র অনেক পরিশ্রম করেছিলো এবং এটি কিছু টেনশন তৈরি করেছিল। আমরা সামনে এগিয়ে যেতে চাই এবং পিছনে পড়ব না। কিভাবে  সম্পর্ক আরো দৃঢ় করা যায় তার উপায় খুঁজে বের করতে হবে।দুইদেশের মধ্যে অনেকগুলো কঠিন ইস্যু আছে যেমন র‌্যাব নিষেধাজ্ঞা, শ্রমাধিকার, মানবাধিকার, ব্যবসায়ীক পরিবেশ সংস্কারসহ অন্যান্য ইস্যু। আমি আজকে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি দুইদেশের কঠিন বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাব। কঠিন বিষয়গুলো আলোচনার জন্য দুইদেশের জন্য ইতিবাচক বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের সহযোগিতা দরকার। আমরা এখানে নতুন বিনিয়োগের কথা বলছি, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সুযোগ, ক্লিন জ্বালানিসহ অন্যান্য বিষয় বলে তিনি জানান। 

[৭] ডোনাল্ড লু বলেন, আমি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দুর্নীতি প্রতিরোধের বিষয়ে আলোচনা করেছি। আমরা একসঙ্গে সরকারের স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করতে পারি এবং এর মাধ্যমে যেসব কর্মকর্তারা দুর্নীতি করেছে তাদের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে পারি।

[৮] পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার।  আমাদের বহুমাত্রিক সহযোগিতার ক্ষেত্র রয়েছে এবং একই সঙ্গে গত ৫৩ বছরের আমাদের অভিযাত্রায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। 

[৮.১] পঞ্চম বারের মতো সরকার গঠন করার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। সম্পর্ককে ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সিঙ্গেল কান্ট্রি হিসেবে সবচেয়ে বড় ডেস্টিনেশন। বিনিয়োগের দিক থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় দেশ। 

[৯] তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশে ৪০টি আইটি ভিলেজ করার যে পরিকল্পনা করেছি সেখানে যাতে তারা বিনিয়োগ করে। কিছু বিনিয়োগ ইতোমধ্যেই আছে। এছাড়া আমাদের বিশেষ অর্থনীতিক জোনের মধ্যে যাতে বেশি করে বিনিয়োগ করে আরো যাতে বিনিয়োগ আসে তা নিয়ে কাজ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছি।  যে জিএসপি সুবিধা আমরা আগে ভোগ করতাম এখন করিনা সেটি তারা ফিরিয়ে দিতে চায়। তবে সেক্ষেত্রে আমাদের লেবার পলিসিটা আরো একটু রিভিউ করতে হবে। যেটা আমরা রিভিউ করছি। এটি নিয়ে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আমাদের রিজার্ভ তথা আমাদের আর্থিক খাতকে শক্তিশালী করার জন্য তাদের ডেভলপমেন্ট ফিন্যান্স করপোরেশন (ডিএফসি) নামে একটি প্রতিষ্ঠান আছে সেখান থেকে তারা অর্থায়ন করতে চায়। সেটিও তিনি জানিয়েছেন। 

[১০] পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের কয়েক কোটি মানুষ ট্যাক্স দেয়ার উপযুক্ত হলেও তারা সবাই ট্যাক্স দেয় না। তারা আমাদের ট্যাক্সসেশন সিস্টেমটা পজিটিভ করার জন্য সহযোগিতা করতে চায়। এছাড়া বাংলাদেশি ছাত্ররা যাতে আরো ব্যাপকভাবে তাদের দেশে যেতে পারে সেটি তারা চায়। সেক্ষেত্রে আমি তাদের একটি একচেঞ্জ প্রোগ্রাম করার প্রস্তাব দিয়েছি।

[১১] এর আগে পরিবেশ মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে ডোনাল্ড লুর। সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী